ভোট দিলাম। এদেশে (ব্রিটেনে) প্রথম। আর জীবনে দ্বিতীয়বার। এদেশে এ কবছরে বেশ কটা ভোট হয়ে গেল। এখানে কমনওয়েল্থ দেশগুলো ভোট দিতে পায় আর রেজিস্টার না করলে ফাইন করে বলে রেজিস্টার করেও রেখেছিলাম। কিন্তু এদের রাজনীতির উদ্দেশ্য বিধেয় কিছু নিয়েই খুব একটা মাথা ঘামাইনি। আমি ভারতীয়, এদেশে থাকি, বেসিক হ্যিউম্যান রাইটগুলো পেলেই চলে যায়। কোন পার্টির কিসের কারণে কী পরিবর্তন আনে, মাথা বিশেষ ঘামাতে লাগত না।
Sci-Fi সঙ্কট
একটা জিনিস আমি
অনেকদিন ধরেই ভাবি, বাংলায় সাইন্স ফিকশন
লেখা এবং পড়া, দুটোই এত কম কেন? এদিকে তো সাইন্স পড়ার জন্যে লোকে দরে স্কুল পাল্টে
ফেলছে (নিজের স্কুলে চান্স না পেলে, বা আরও ভালো স্কুলে চান্স পাবার জন্যে)। তাহলে বাংলায়
সাই-ফাই লিখছে নাই বা কেন, আর যে কটা তবু আছে
সেগুলোও বা কেন বিশেষ সেলিব্রেটেড নয় ভাবতে অবাক লাগে। আর তখনই মনে হয়, সত্যি সাইন্স ভালবেসে কজনই বা সাইন্স পড়ে? কজনই বা সাইন্স পড়ে সত্যি নিজের জীবনে তাকে দেখতে পায়
বা ব্যবহার করে? বরং এড়িয়ে চলে। অঙ্ক
কত বাজে জিনিস বলতে পেলে আর কিছুই চায় না। বোধহয় অঙ্ক ভালবাসি না বলার লজ্জার চেয়ে
অঙ্ক আসলে কত ভালোবাসার অযোগ্য, এটা বললে নিজেকে
আরেকটু বেশি ভালবাসা যায়। ফলে সেই জাত যে সাইন্স ফিকশন কম পড়বে সেটাই তো
স্বাভাবিক।
Mission: বাংলা
ক'দিন ধরে এতরকম ভ়ার্সান শুনে চলেছি, ভাবলাম নিজের রিসার্চ নিজেই করা উচিত। দেখলাম ব্যাপারটা এইরকম:
এই বক্তব্যে নানা লোকের নানা ভয়। কারুর ভয় "বাধ্যতামূলক" নিয়ে। কারুর ভয় "বাংলা হতেই হবে"। কেউ আবার ওই কারণেই সাবাশি দিচ্ছে। কেউ বলছে বাধ্যতা কি আর সাধে? ইঁটের উত্তর তো পাটকেলই হতে হয়। একটা বিষয়ে সবাই একমত। 'বাঙালি'কে বাংলা গিলিয়ে না খাওয়ালে কোনও আশা নেই (নো পান ইন্টেন্ডেড)।
প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলক তিনটি ভাষার মধ্যে একটি বাংলা হতেই হবে।
এই বক্তব্যে নানা লোকের নানা ভয়। কারুর ভয় "বাধ্যতামূলক" নিয়ে। কারুর ভয় "বাংলা হতেই হবে"। কেউ আবার ওই কারণেই সাবাশি দিচ্ছে। কেউ বলছে বাধ্যতা কি আর সাধে? ইঁটের উত্তর তো পাটকেলই হতে হয়। একটা বিষয়ে সবাই একমত। 'বাঙালি'কে বাংলা গিলিয়ে না খাওয়ালে কোনও আশা নেই (নো পান ইন্টেন্ডেড)।
উচ্চ-man
এমনি ফেসবুকে বিশেষ আসা হয় না আজকাল। এলেও চতুর্দিকে যা দেখি, পারতপক্ষে চুপচাপ থাকি। কথা বাড়ালেই বাড়ে, আর বেশি বেড়ে গেলেই ক্লান্ত লাগে। ফেসবুকটা এখন ফোনবুকে এসে ঠেকেছে।
কদিন আগেই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ছিল দেখছিলাম, আর লোটা-মাচা করে খিস্তাখিস্তিতে নিউজ়ফিড বোঝাই হয়ে যাচ্ছিল। এই বাঙাল-ঘটির তরজার কিছু একটা ফুর্তির জায়গা আছে নিশ্চয়ই, নইলে লোকের এত পুলক কিসের, বোর হয় না কেউই। কিন্তু ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ম্যাচের মতই ও রসে আমি বঞ্চিত। ফ্যানাটিক হওয়া আমার ধাতে নেই। লোটা-কম্বল-মাচা-মশারি নিয়ে যে কত ক্রিয়েটিভ খিস্তি-মিম-নির্মাণ সম্ভব আর অত বোঝা বয়ে যে কত নিচে নামা সম্ভব, না দেখলে পেত্যয় যায় না। সে যাক, যে যা করে ভাল আছে থাক গিয়ে, ভাবি আমি। দেখি শুধু। কালও দেখছিলুম। এর মধ্যেই দেখি একগাদা পরমব্রত-বয়কট মার্কা স্টেটাস। সঙ্গে ওই লালহলুদসবুজমেরুনমার্কা হ্যাশট্যাগ।
ছুটির দায়
যখন গরমের ছুটি পড়ত,যখন ছুটি-ছুটি হত আর আমার যুক্তিফুল-মাখা ভাত পড়ে থাকত, যখন ছুটি-ছুটি হয়ে গেলেই হাতেরলেখা নিয়ে বসতে হত আর ভাবতাম কেন জড়ানো হাতের লেখা শিখতে হবে যদি সেই নিটনেসের জন্যে ছেড়ে ছেড়েই লিখতে বলবে, আর যখন লিখতে ভাল্লাগছে না বলে মায়ের পাশটাতেই ঘুমের ভান করে শুয়ে পড়তাম, আর জানলা দিয়ে শুধু ফুটফুটে নীল আকাশের গায়ে তিনটে নারকোল গাছের মাথা দেখতাম, আর তারও ওপরে অনেক দূরে কালো কালো দাগের মত ছোট হয়ে যাওয়া চিল উড়ত আর ভাবতাম ওরা ডানা ঝাপটায় না কেন, শুধু গ্লাইড করে কি করে, আর এভাবেই কি জটায়ু উড়ত আর তাই ওর ডানা কেটে দেওয়া অত ইজ়ি ছিল, আর এভাবেই কি গাংচিলও উড়ে মাছ চুরি করতে গিয়ে বগাপুলিশের হাতে ধরা পড়ে যেত আর সেই ভয়ে ভুতু আর হাঁসুখোকা গুটি গুটি সরে পড়ত, এসব ভাবতে ভাবতে বেখেয়াল হয়ে যেতাম, তখনই মায়ের ঘুম ভেঙে যেত আর হাতেরলেখা একটুও এগোয়নি বলে রেগে যেত কারণ প্রত্যেকবারের মতই আমার ছুটির কাজ জমতে থাকত শেষদিনটার জন্যে।
বন্ধুত্ব
লোকজনের সাধারণতঃ একটা প্রবণতা থাকে প্রমাণ দেওয়ার যে "এতগুলো লোক আমায়
নিয়ে খুশি (অর্থাৎ আমি বেশ ভালই সঙ্গে নিয়ে চলার মত একটা মানুষ)"। নিজেও
অন্যদের একইভাবে নম্বর দেয় ও বিচার করে। সেই ছোটবেলা থেকে এর ট্রেনিং শুরু
হয়। যবে থেকে স্কুল-জাতীয় কিছুতে ঢুকিয়ে দেয়, তবে থেকেই আশা করে
প্যাস্টেল-চিবানো, কানে-পেন্সিল-গোঁজা, নাক-থেকে-সিকনি-গড়ানো সতীর্থদের
মধ্যে থেকে নিজের clique খুঁজে নেবে ছোটরা। আর সে দায়িত্বটা ঠিকমত পালন
হচ্ছে কিনা পরীক্ষা করে "কিইইই, বাবুসোনা? ইস্কুলে কটা বন্ধু হল?" বিশেষ
করে বাচ্চা-in-question যদি introvert, লাজুক হয়, তবে তো এই পরীক্ষা প্রতি
হপ্তার exercise! গেঁড়েটা হয়তো ভাবতেই পারেনা যে তার একাধিক বন্ধু সংগ্রহ করার
কথা। তারমধ্যেই পরবর্তী প্রশ্ন থাকে তাদের বন্ধুদের কি নাম। বলতে না পারলেই "এ
বাবা! বন্ধুকে নাম জিজ্ঞেস কর নি? বন্ধুর নাম জানতে হয় তো!" সবে হয়তো
ইরেজ়ার আদান-প্রদান দিয়ে একটা আধো-পরিচিতি তৈরি হচ্ছিল, খুদেটা সবে নিজের
স্বভাবের সাথে নতুন-প্রাণীটা ঠিক কিভাবে কম্প্লিমেন্ট করবে, বা আদৌ করবে
কিনা বুঝে ওঠার চেষ্টা করছিল, 'হিতৈষী' গুরুজনের গুঁতোয় বেহিসেবী লেবেল
মেরে দিতে শুরু করে দিতে হল তাকে। ব্যাপারটা অফিশিয়াল আর কারখানা-সম করে
তোলার জন্যে রইল অমোঘ 'ভাব' (বুড়ো-আঙুল সহযোগে)। পরে যদি সুবিধে না হয়, তার
জন্যে তো উপায় আছেই: আড়ি।
পাত্র যখন বরকর্তা
যখন মেয়েগুলোর বিয়ে হয়, মানে কনেপক্ষকে চিনি, তাদের শখ-আহ্লাদগুলো, বিয়েতে কি কি হবে, কোনটা কোনটা যেন কক্ষনও না হয়, সবটাই খুব অব্ভিয়াস মনে হয়। সবটাই যেন কনেকে ঘিরে, কনের মন রেখে, কনের কথা ভেবে। কনেই তো মেন অ্যাট্রাক্শন! তাকে ঘিরেই তো এত হুজুগ। অনুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র তো সে-ই। বাকি সবকিছু যেন তার জন্য সেজে উঠেছে। তাই সেই বিয়েগুলোতে পাত্রগুলোকেও প্রায় সেই সজ্জার অঙ্গ বলেই মনে হয়। চিনি না বলেই হয়তো। মনে হয় যেন মেয়েগুলোরই বিয়ে, সেটা সফল করতেই ফুল-মালা-পোর্টেবল থামের মত পাত্রও জোগাড় করে আনা হয়েছে। মেয়েটা যাতে লজ্জাবতী পোজ় দিতে পারে, তাই প্রপ হিসেবে বরের আমদানি।
Subscribe to:
Posts (Atom)
যদি ভাল্লাগে...email-এ sign up করতে পারেন/পারো/পারিস, নতুন লেখা ছাড়া কিচ্ছু পাঠাবো না, promise...