শ বাবু #৫

দিন যায়। তিনদিন টাইম হবে না বলে ২ ঘন্টার বদলে ৩ ঘন্টা লোকটার ঘ্যানঘ্যানানি শুনতে হয়। "কঠোর বিদ্যাভ্যাস" আয়ত্তের অজস্র "টোটকা" শুনি। কেমন লোকটার সাক্সেসফুল কেরিয়ারের পেছনে পাখাবিহীন চিলেকোঠায় বাইরে থেকে শেকল তুলে বন্দী থাকার অবদান সবচেয়ে বেশি। কেমন রামকৃষ্ণ মিশনের ঠেঙানির অবদান তার পরেই। ইতিমধ্যে আমার হাতের লেখা পাল্টে ওর মত করে ফেলতে হয়েছে (যেটা কিনা হুবহু এরিয়াল ফন্ট, নো কার্সিভ্ অ্যালাওড)। পরীক্ষা যে শেষ হয় না, বলাই বাহুল্য।
অ্যাডিশনাল কিন্তু আর হয় না। আমার যে তাতে আপত্তি তা নয়, কিন্তু একে তাড়ানোটা খুব দরকার। এদিকে আমি ওর ওই অসহ্য নোট আর নিতে পারছি না। মুখস্থ আমি পরীক্ষার চাপেই করতে পারি না, ও কে হরিদাস পাল যে আমি শুনতে যাব ওর কথা? এদিকে আমি মুখস্থ করি না বলে সেই অজুহাতে শাসন করতে বসে আর অ্যাডিশনালের সময় থাকে না। আবার একদিন খুব হুলিয়ে গন্ডগোল পাকাল। আর যাবার সময় বলে গেল, মুখস্থ হলে যেন ফোন করে জানাই, তবেই আবার আসবে নইলে না।
প্রথমে এত আনন্দ হল, বলার কথা না। ওকে উত্যক্ত করতে পারার ফুর্তিই আলাদা। কিন্তু ফোন? এরকম ফোন তো সবার সামনে করা যাবে না? আর মা তো থাকবেই। যদি দাদুর ঘর থেকেও লুকিয়ে করি, নম্বর তো জানি না। ওই হনুর নম্বর আমার পুষতে বয়েই গেছিল। এখন তো মার কাছেই চাইতে হবে! সে সময় অত ভাল মিথ্যে বলতে পারতাম না (এই এসব ব্যাদড়া টিচাররা এসেই মিথ্যের উপকারিতার প্রতি ক্রমশ জ্ঞানচক্ষু খুলে দিয়েছিল)। অতএব ডিনায়াল। আগে ওই দিনটা তো আসুক, ভাবব।
লোকটা এল না। মা একটু বিরক্ত হল। খাবার করে রেখেছিল। জানাতে পারত। আমি ঘাপটি মেরে আছি। ওরা আশা করছিল পরে অন্তত জানাবে, জানাল না। পরের দিনও এল না। জেদটা ভাবো! লোকে এরপর হিন্ট তুলে নেয় যে আর আসবে না। কিন্তু আমার কপাল আর কবে আর এত ভাল। বাবা ওর শরীর খারাপ কিনা ভেবে একদিন রাতে ফোন করে বসল।
"না না, আমার কিছু হয়নি। আমি তো ওকে বলেই এসেছিলাম যে পড়া তৈরি হলে তবেই যাব। ও বলেনি?"
যদি ভাল্লাগে...email-এ sign up করতে পারেন/পারো/পারিস, নতুন লেখা ছাড়া কিচ্ছু পাঠাবো না, promise...